১ মাদরাসার আবাসিক ভবনটি ৬তলা। হাসানরা ৩য় তলায় থাকে। সুপ্রশস্ত ভবনটির একপাশ ওদের জন্য। ওরা ২০জন। বাকী আর প্রায় ৪০জন এই এ তলাতে থাকে। শিক্ষকও থাকেন দু'জন। ওরা ২০জন এবার আলেম পড়ছে। বাকীদের কেউ হেদায়ায় কেউ তাকমিলে। ২ ওদের হোস্টেলটি বেশ পুরানো। প্রায় ৫০বছর আগের। তবে রাতে গা ছমছম করে না। কিন্তু সমস্যা হলো গোডাউন মার্কা কিছু জায়গা নিয়ে। ভরদুপুরেও সেখানে অন্ধকার থাকে। সবসময়ই লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হয়। ৩ সব জায়গাতেই কিছু মানুষ হয় খুব সাহসী আর কিছু থাকে ভীতুর ডিম। ওদের ২০জনের ৩জন খুব সাহসী। আর ১০জন ভীতুর ডিম। বাকিরা বরাবর। ৪ জ্বীন~ভূত বলতে কি কিছু আছে? অবশ্যই আছে।! নইলে প্রাকৃতির অনেক ঘটনার কোন ব্যাখ্যা নাই কেন? তা যাই হোক বাস্তব কথা হলো যে বেশি ভয় পায় ভূত তাকেই বেশি ধরে। মানিক ভাই বারান্দার নিকটে শোয়। তার পাশে ব্রেনি জাকির। দু'জনেই রাতের আধারে ক'দিন যাবৎ কী যেন দেখছে! কেউ সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। ওরাও তেমন পাত্তা পায় না। সাহসীদের হুংকার ওদের চুপসে রেখেছে। ওরা প্রত্যহ ক্যপ্টেন হাসানকে সব শুনায়। হাসান সব শুনে কী বলবে খুজে পায় না। তাছাড়া ওরও ইদানীং কেমন কেমন যেন লাগছে।! ক'দিন যাবৎ সেও মনে হয় কিছু দেখে। ৫ বৃহ:বার। বাসায় যাবার দিন। ২০জনের ৫জনই বাসায় গেল। মানিক জাকিরও আজ নেই। মেহনতি হুসাইন বেশ রাত করে পড়ে। উপাধি তো আর সাধে পায় নাই! পরীক্ষার সময় ছাড়াও একটার আগে ঘুম নাই। অথচ ছাত্রাবাসের নিয়ম ১০.৩০মিনিটে 'লাইট অফ' হবে। বেচারা আজ পোনে একটায় পড়া ছাড়ল। হুসাইন তেমন সাহসীও না ভীড়ুও না। মধ্যম। চিন্তা করলে ভয় ঢুকে। বাথরুমে ঢুকার সময় দেখল- ওর থেকে দু’তিনটা বাথরুম পর ৪নাম্বারটার দরজাটা সামান্য নড়ে উঠেছে। মনে হলো কেউ ঢুকেছে। ও দরজা লাগানোর আগেই ওপাশেরটা লাগানোর আওয়াজ আসল। বিকট আওয়াজ!! এত বড় আওয়াজ কি কেউ এই রাতে করে? কোন মতে পেশাব করল। তারপর জলদি দৌড়! আসার সময় পিছন থেকে কী যেন এক অদ্ভুত আওয়াজ শুনল।
মেহনতী হুসাইনের পাশে দুইটা সিট খালি। একটা মানিকের অন্যটা জাকিরের। ও এসেই কম্বলের ভিতর ঢুকল। ভয়টা তখনো কাটেনি। ভাবছে- গতকাল মানিকের দেখা সাদা পোশাকের 'অদৃশ্য লোকটা' নিয়ে। ৬ রাত তখন দুইটা বিশ। সবাই গভীর ঘুমে। হঠাৎ সাহসী আলি জেগে উঠেছে। চতুর্দিকে অন্ধকার। ডিম লাইটে তেমন আলোকিত হচ্ছে না। আলির মনে হচ্ছে 'কিছু ঘটবে এখন।' ততক্ষণে উঠে বসেছে সে। দেখতে পেল – ডান পাশে শোয়া পিচ্চি আহমাদের উপর কী যেন একটা। বুঝা যাচ্ছে না। পিচ্চির শরীর থরথর করে কাঁপছে। মুখে হালকা গোঙানিও শুরু হয়েছে। যেন এখনই অজ্ঞান হবে। সাহসী হিস হিস করে উঠল। এতে পিচ্চির আওয়াজ বেড়েই চলছে। (পরে অবশ্য জানা গেছে সে ভয় পায় নাই। দু:স্বপ্ন দেখছিল।) আওয়াজ বেড়ে গেলে সামনে থাকা লম্বু সালমান লাফ দিয়ে সোজা দাড়াল। তারও মনে হলো কিছু হয়েছে। সে উঠে লাইটের সুইচ খোজা শুরু করলো। এদিকে দেখা গেলো বিপত্তি। সাহসির হিসহিসানিতে অদ্ভুত বস্তুটি ছুটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। এবং দরবেশ হুযির পাশে গিয়ে পড়ল সেটা। এর আগে তিনজনকে ওভার করেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো যার পাশ দিয়েই অদ্ভুত বস্তুটি যাচ্ছে সেই চিৎকার শুরু করেছে। তাও অদ্ভুত এবং ভয়ংকর। হুযির চিল্লানিটা একটু জোরেই হলো। সবশেষ আক্রমন। তালিব আলির উপর হামলা হলো। আর এতেই ঘটল সবচে’ বড় অঘটন! ওর পাশেই ছিল মেহনতী ভাই। প্রচন্ড ভয় পেলো। আগের ভয় মিলিয়ে ওর চিৎকার ছিলো সবচে ভয়ংকর। ওদিকে সাল্লু লাইটের সুইচ পেয়ে গেছে। জ্বালাবে। অনেকে তখন চিৎকার করে উঠে বসেছে। এদিক ওদিক দেখছে। লম্বুকে দেখে অনেকটা ভুত ভুত মনে হলো। সবাই আরো বেশি চেচিয়ে উঠল। তিন তলার সবাই উপস্থিত। লাইট জ্বলে উঠেছে। শিক্ষদ্বয়ও এসেছেন। যেন ১৫জন খেলোয়াড় মাঠে খেলছে (চেচাচ্ছে) আর চারপাশ থেকে ৬০জন দর্শক তা দেখছে। মুখে কোন কথা নেই। সবাই বেশ মজা পেয়ে ফিরে গেলো। পরে কয়েকজনের মেহনতী ভাইয়ের জন্য সারারাত জেগে থাকতে হয়েছে। ৭ সম্প্রতিকালে ঢাকা শহরে বিড়ালগুলোর দুর্ভিক্ষ চলছে। এটা শহরের উন্নতির আলামত। আগে রাস্তার আশেপাশে বাসার ভিতর প্রচুর খাদ্যের যোগান হত। এখন সব আধুনিক হবার পথে… বহুকষ্টে বিড়াল ঢুকেও যখন কিছু না পায় তখন ক্ষুধার্ত বিড়ালগুলোর কারনে তৈরী হয় ভয়ংকর পরিবেশ।!!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
০২ ডিসেম্বর - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
১১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।